বিসিএস এর সহজ পাঠ-১
তোমাদের মনের মধ্যে একটা প্রশ্ন আসছে যে গ্রাজুয়েশন এর পর বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বেস্ট অপশান কী?
আমরা সবাই চাই আমাদের লাইফে সবচেয়ে ভালো যেটা সেটা করতে।
তোমাদের গার্ডিয়ানদের মধ্যে কিন্তু একটা প্রশ্ন কাজ করে। আমাদের সন্তানদের জন্য বেস্ট কোনটা হবে?
P2A তে আমরা কখনোই বলি না যে বিসিএস ই একমাত্র বেস্ট অপশন।
সম্ভবতো P2A একমাত্র বিসিএস কোচিং যেখানে আমরা কখনোই বলি না যে বিসিএস একমাত্র অপশন; বিসিএস না হলে লাইফ শেষ এবং তোমাকে বিসিএস ক্যাডার হইতেই হবে।
সেই দর্শন নিয়ে P2A কোচিং জগতে আসে নাই। কেউ P2A কে বলতে পারবে না যে আমরা বিসিএস প্রোমোট করি। যারা বিসিএস প্রস্তুুতি নিতে চায় আমরা তাদেরকে গাইড করি কিন্তুু আমরা কাউকে বলি না বিসিএস বেস্ট অপশান।
তো গ্রাজুয়েশন এর পরে তুমি যদি আমাকে প্রশ্ন করো, ভাইয়া বেস্ট অপশান কোনটা?
আমি বলবো, বেস্ট অপশান হচ্ছে তুমি যদি ভালো মেধাবী হও তাহলে দেশের বাহিরে চলে যাওয়া।
কারন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ভালো এরকম অনেকে অনেকরকম কথা বার্তা বলে। এগুলা ফালতু কথা। যে দেশে জন্মেছি সে দেশকে ভালোবাসা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু সেজন্য দেশেই থাকা উচিত-এগুলো যারা বলে তাদের সন্তানরা ঠিকই বিদেশে থাকে। কারণ তারাও জানে বাংলাদেশের ফিউচার অনিশ্চিত।
আমরা একদম সাদা চোখে বলতে পারি, বাংলাদেশের চেয়ে তুমি বাইরে চলে গেলে তোমার ভবিষ্যৎ ভালো হবে। যদি ধরেও নিই বাংলাদেশের ফিউচার উজ্জ্বল তবুও বাইরে তোমার ফিউচার অনেক গুনে বেশি ভালো।
তাহলে, সবাই কি চাইলেই বাইরে যেতে পারবো? চাইলেই উচ্চ শিক্ষার জন্য বাইরে যেতে পারবো?
না। কারন, কারো কারো পারিবারিক সাপোর্ট নাই। বাইরে যাওয়ার জন্য কারও টাকা নাই। আবার কারো আব্বা-আম্মা বিদেশ যাইতে দিবেনা…
তবে ফার্স্ট ওয়ার্ল্ড কান্ট্রিতে গেলেই যে তুমি একবারে চাকরি পেয়ে যাবা,
ওখানে গেলে তোমাকে তেমন কাজকাম করা লাগবে না- বিষয়টা তেমন না।
ওখানেও তোমাকে যথেষ্ঠ স্ট্রাগল করা লাগবে।
এখন তোমার বাইরে এস্টাবলিশ হতে স্ট্রাগল করার মতো স্টামিনা নাই; দেশে থাকা ছাড়া অন্য কোনো অপশন নাই, তাইলে তোমার জন্য বিসিএস সবচেয়ে ভালো চাকরির একটি। তবে একমাত্র না।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কেনো বিসিএস ভালো চাকুরি?
বিসিএস এর সুবিধা গুলো কী কী?
যে কোনো চাকরিতে আবেদন করার জন্য কী চায়?
সার্টিফিকেট চায়।
বলে, আপনার সার্টিফিকেট কই, আপনার মার্ক সিট কই? আপনি জিপিএ কত পাইছেন? আপনার অনার্স মার্স্টাস এর সার্টিফিকেট/ মার্ক সিট নিয়ে আসেন। আপনার সিভি নিয়ে আসেন।
কত নিয়ম কানুন! কিন্তু বিসিএস হচ্ছে এমন একটা জব যেখানে তুমি অনার্স ৪র্থ বর্ষের ফাইনাল এক্সাম এপিয়ার দিয়েই পরীক্ষা দিতে পারবা। তোমার অনার্স এর সার্টিফিকিট, মার্ক সিট কিছুই লাগবে না। এই অপশন কিন্তু তুমি অন্য কোথাও পাচ্ছো না।
এখন আসো পড়াশোনার ব্যাকগ্রাউন্ড।
তুমি প্রাইভেট বা অন্য যে কোনো জবে যাও তোমার এইটা থাকতে হবে, ওইটা থাকতে হবে, এমবিএ থাকতে হবে, এই কোর্স করা থাকতে হবে, ওই কোর্স করা থাকতে হবে, ওই স্কিল থাকতে হবে। এই ধরনের নানা ব্যাপার।
কিন্তু বিসিএস হচ্ছে এমন একটা জব, তুমি যে বিষয়েই পড়ো না কেনো বিসিএস এর জন্য তুমি আবেদন করতে পারবে। তুমি কোন বিষয়ে পড়ছো; তুমি কি পালিতে পড়ছো? সংস্কৃতিতে পড়ছো? নাকি ইসলামের ইতিহাসে পড়ছো? নাকি ফার্সি তে পড়ছো? এই সব কোনো ব্যাপার না।
তোমার অনার্স যে বিষয়েই হোক না কেনো তুমি বিসিএস পরীক্ষা দিতে পারবা।
এমনকি তুমি যদি ডিগ্রি পাস কোর্সেও থাকো তাহলে তুমি মাস্টার্স করলেই বিসিএস পরীক্ষায় আবেদন করার যোগ্য হবা।
এখন আসো রেজাল্ট।
আমরা এখন দেখতে পাই যে, বিভিন্ন প্রাইভেট জব এবং ব্যাংকে বলে যে অনার্স/মাস্টার্স এ আপনার এতো জিপিএ লাগবে। অন্যদিকে পুরো শিক্ষাজীবনে যেকোন দুটির বেশি তৃতীয় শ্রেণি না থাকলেই তুমি বিসিএসে আবেদন করতে পারবা।
অথচ জিপিএর জন্য অনেকে অনেক চাকুরিতে আবেদনই করতে পারে না।
……চলবে
ডা. শামসুল আরেফিন (৩৭ বিসিএস)